সরিষার তেল আমাদের প্রতিদিনের রান্নার অন্যতম পরিচিত উপাদান। এটি যে শুধু খাবার সুস্বাদু করার কাজে লাগে, তা কিন্তু নয়। বরং আমাদের শরীরের নানা উপকারে লাগে এই সরিষার তেল। প্রতিদিনের ছোটখাট স্বাস্থ্যগত সমস্যা এড়াতেও এটি ভীষণ কার্যকরী। করোনার এই সময়ে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না কেউ। তাই ঘরেই চিকিৎসা নেয়া যায় এমন অনেক অসুখে কাজে লাগাতে পারেন সরিষার তেল। বিস্তারিত প্রকাশ করেছে বোল্ডস্কাই-
ত্বকের যত্নে
সরিষার তেলে এমন অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে, যা আমাদের ত্বকের জন্যে ভীষণ উপকারী। এতে আছে প্রোটিন, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং পরিমাণমতো ভিটামিন এ। ব্রণ হোক বা ট্যান পড়া- সব ক্ষেত্রেই কাজে লাগে এই তেল। অল্প তেল হাতে নিয়ে ভালো করে ম্যাসেজ করুন ট্যান পড়া জায়গায়। তারপর পানিতে তুলো ভিজিয়ে আস্তে আস্তে মুছে নিন। কিছুদিনের মধ্যেই উপকার পাবেন।
অনেকেই আছে যারা মুখের কালো দাগ নিয়ে চিন্তিত থাকেন। অনেকে ব্রণর জন্যে চিন্তিত। ব্রণর কমে গেলেও দাগ থেকে যায়। এর সহজ সমাধান আছে। দু চামচ সর্ষের তেল নিয়ে তার মধ্যে এক চামচ নারকেল তেল মেশান। এর মধ্যে এক চামচ লেবুর রস আর দু চামচ টক দই দিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে মুখে মাখুন। মিনিট দশেক পর ধুয়ে ফেলুন। শুধু দাগ যাবেনা, সাথে মুখের জেল্লা বাড়বে।
আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় উপকারী
অনেকেই আছেন, যারা এই রোগে ভুগছেন। পেইনকিলার নিয়ে হয়তো দিন পার করতে হচ্ছে তাদের। এর থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন সরিষার তেল। সরিষার তেল আর আদা এই দুটোতে এমন উপাদান থাকে যা প্রদাহজনিত উৎসেচকের ক্রিয়ার গতি কমিয়ে দেয়। ফলে, ব্যথার থেকে আরাম পাওয়া যায়। জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সরিষার তেলে পরিমাণ মতো কর্পূর মেশান। তেল টা গরম করে ঠান্ডা হতে দিন। এবার সেই তেল মালিশ করুন। আরাম পাবেন।
হার্ট ভালো রাখে
হার্টের সমস্যার কারণে খাবার থেকে তেল বাদ দিতে বলেন অনেক চিকিৎসক। অনেকে রান্নায় সয়াবিন বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন। তবে পরিমিত খেতে পারলে সরিষার তেল হার্টের পক্ষে ভালো। এতে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে তোলে।
রক্ত ভালো রাখে
শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে সরিষার তেল। এই প্রক্রিযা যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সেদিকেও নজর রাখে। ফলে শরীরের ক্লান্তপেশীগুলোকে উজ্জীবিত এবং সবল রাখে। সরিষার তেল শুধু কোলেস্টেরল কমায় না, সাথে লোহিত রক্ত কণিকার গঠনে ভূমিকা রাখে।
ঠান্ডার সমস্যা থেকে বাঁচায়
ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডার সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরই। সমস্যার ধরণ খুব বেশি গুরুতর না হলে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই না। ঘরোয়াভাবে চিকিৎসা নিলে ঠান্ডার সমস্যায় কাজে লাগে সরিষার তেল। দুই হাতে তেল নিয়ে বুকে ম্যাসাজ করুন। এটি বুকে জমে থাকা কফ বের করতে সাহায্য করবে। নাক বন্ধ হলে একবাটি পানিতে কয়েক ফোঁটা সরিষার তেল দিন। এবার সেই পানি গরম করে তার ভাপ নিন। এত বন্ধ নাক খুলে যাবে।