দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া দেশের সুপরিচিত ও বিখ্যাত ধর্মীয় বক্তা অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ বন্ধু পরিষদ পরিবার । (শনিবার ২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ বন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা নুর ইসলাম নাহিদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা সাংবাদিক কলামিস্ট আনিসুর রহমান এই প্রকাশ করেন । সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা নুর ইসলাম নাহিদতিনি আরো বলেন বর্তমান সময়ে এমন বক্তা পাওয়া খুব কঠিন তিনি সব সময় আমাদের মাঝে স্মৃতি হয়ে থাকবেন তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুক । এদিকে .. খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোলাম সরওয়ার সাঈদী ছিলেন একজন পীরজাদা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রয়াত পীর সাহেব আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানীর (রহ.)-এর সুযোগ্য সন্তান তিনি। এছাড়া আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) -এর নাতি তিনি। গোলাম সরোয়ার সাঈদীর প্রপিতামহ ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রামের হযরত মাওলানা মুকসুদ আলী (র.)। তিনি দেশবরেণ্য আলেম ছিলেন। গোলাম সরোয়ার সাঈদীর দাদা মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ ১৯৩৭ সালে কসবা উপজেলার পৌর সদরের আড়াইবাড়ী আলিয়া মাদরাসা ও একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তার ছেলে মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী এর হাল ধরেন। তারপর মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী ২০০৪ সালে মাদরাসাকে কামিল মানে উন্নীত করেন। পাশাপাশি গড়ে তোলেন আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া ছায়েদীয়া এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, আড়াইবাড়ী হাক্কানীয়া হাফেজী মাদরাসা, আড়াইবাড়ী সাইয়েদা সুরাইয়া নূরানী মাদরাসা, ইসলামী বুক ক্লাব। বর্তমানে ইবতেদায়ী, জুনিয়র, দাখিল, আলিম ও ফাযিল কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে সেখানে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মাদরাসাটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তার, অনৈসলামিক কার্যকলাপ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে। দায়িত্ব নিয়ে মাদরাসার পাঠাগারকে মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বইয়ে সমৃদ্ধ করেন মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী। তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে তা বিলিয়ে দেন। মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানীর তৃতীয় ছেলে মাওলানা মো. গোলাম সারোয়ার সাঈদী। তার পাঁচ ছেলে ও চার কন্যার মধ্যে সাঈদীই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। অন্যরা ব্যবসা ও চাকরিতে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুললেও মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা পড়াশোনা করা মাওলানা মো. গোলাম সারোয়ার সাঈদী বিগত কয়েক বছরে ইউটিউব চ্যানেলে ইসলাম বিষয়ক নানা বিষয়ে বয়ান করতেন। এসব বয়ান তাকে বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মিজানুর রহমান আজহারী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রিয় নানাভাই অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার সাঈদি (পীরসাহেব আড়াইবাড়ী দরবার) আল্লাহর জিম্মায়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর দ্বীনের একনিষ্ঠ এই খাদেমকে কবুল করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান বানিয়ে নিন। আমিন। মিজানুর রহমান আজহারী আরও বলেন, ‘একই মঞ্চে নানা নাতিকে আর হয়তো কোনদিন একসাথে দেখা যাবে না। বিদায় নানা ভাই। আমরাও আসছি, পরের কোন এক ফ্লাইটে। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে আল্লাহর জান্নাতে। এভাবেই প্রিয়জনদের বিদায়গুলো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় চিরসত্যকে, আর এই বলে স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায় — প্রস্তুত তো?’