কারিগরি শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দিনভর সড়ক অবরোধ করে। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার অবরোধ কর্মসূচি শুরুর পর মহানগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। মগবাজার, তেজগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ, গ্রীনরোড, মিরপুর রোড, কাকরাইল, পল্টন, মিন্টো রোড, বেইলি রোড, শান্তিনগর, মৌচাক, হাতিরঝিল, রামপুরা, বাড্ডা, প্রগতি সরণি ও র্যাংগস ফ্লাইওভারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিল বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। শুরুতে মগবাজার ও তেজগাঁও এলাকায় যানজট দেখা দিলে তা দ্রুত সংযোগ সড়ক ও আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে প্রায় পুরো ঢাকা স্থবির হয়ে পড়ে। শহরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকায় যানবাহনের যাত্রী বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অবশেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেন। এরপর ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ভুক্তভোগীরা জানান, যানজটের কারণে মানুষ সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। অনেকের নির্ধারিত কাজ, মিটিংও পণ্ড হয়েছে। এর আগে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি পূরণে সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অবরোধের কারণে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি ছয় দফা দাবির বিষয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা অতি দ্রুত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসব।’ এরপরই সড়ক ছেড়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সোমবার ঢাকা মহনগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, নানা পেশার মানুষগুলোকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকার পর অনেকেই কাজ না সেরেই হেঁটে বাসায় ফিরে গেছেন। এদিন দুর্ভোগের শিকার এক নাগরিক বলেন, তিনি বেলা ১১টায় বাসা থেকে বের হন। শান্তিনগর এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে সার্কিট হাউজ সড়কে প্রথম যানজটে পড়েন। এরপর কাকরাইল হয়ে মগবাজার ফ্লাইওভারের দিকে যাওয়ার সময় আটকা পড়েন চার্চের সামনে। সেখান থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ দপ্তরের কাছে পৌঁছাতে লাগে দেড় ঘণ্টার বেশি। সেখানে বসে থাকতে হয় দীর্ঘ সময়। একপর্যায়ে ট্রাফিক যানবাহনগুলোকে শেরাটন হোটেলের দিকে ঘুরিয়ে দিতে থাকে। সেখান থেকে শাহবাগ পর্যন্ত পৌঁছাতে লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। যানজটের কারণে সেখানেও (শাহবাগ থেকে ফার্মগেটের দিকে) দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়। এরপর গ্রীনরোড, মিরপুর রোড, সোহরাওয়ার্দী হাসাপাতাল, টিবি ও চক্ষু হাসাপাতাল, আগারগাঁও, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, কালশি হয়ে কুড়িলে পৌঁছান বিকাল ৪টার পর।