পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন; নদী দখলকারী ও বালু খেকোদের সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে। পরিবেশ রক্ষা এবং নদীর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে সবাইকে সরব হতে হবে। নদী দখলমুক্ত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। শুস্ক মৌসুমে নদী পানি শুকিয়ে যায় ফলে এর প্রভাব পরে কৃষি উৎপাদনে। মহানন্দা নদীত খনন ও রাবার ড্যাম নির্মিত হলে কৃষি খাতের সম্প্রসারণ হবে। বাড়বে ফসল ও মাছের উৎপাদন। ফলে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিতে সমৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত হবে। এছাড়া প্রকল্পটি এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
আজ(রোববার) “পদ্মা নদীর ভাঙ্গন হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা’র চরবাগডাঙ্গা ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা ” শীর্ষক প্রকল্পের গোয়ালডুবি এলাকায় নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন এবং মহনন্দা নদীতে ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত)” এর আওতায় রাবার ড্যাম নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ বলেন, ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজ খুব কাছাকাছি। বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কার গেট ছেড়ে দেয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীতে ভাঙন বেশি হচ্ছে। বর্ষাকালে ফারাক্কা ব্যারেজের গেট ছেড়ে দেয়ায় এখান দিয়ে প্রবল গতিতে পানি যাওয়ায় প্রথম ধাক্কা লাগায় ভাঙনের তীব্রতা বেশি। তাই পদ্মার গতি প্রকৃতি নিরূপণ এবং ফারাক্কার খুব সন্নিকটের বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন; বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানন্দা নদী খনন ও রাবারড্যাম নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার প্রতিশ্রুতিই বাস্তবে রুপ নিচ্ছে। ১৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬ কি. মি. মহানন্দা নদী ও রাবারড্যাম নির্মিত হচ্ছে। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ আজ প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
পরে মহানন্দা নদীতে ১৫৭ কোটি ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫৬৫ টাকা ব্যয়ে রেহাইচর এলাকা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, সংরক্ষিত আসনের এমপি ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ।
শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি হ্রাস পাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নেমে যায়। ফলে গভীর-অগভীর নলকূপ দ্বারা সেচ কাজ ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। মহানন্দায় রাবার ড্যাম নির্মাণ সম্পন্ন হলে সেচ সুবিধা নিশ্চিত হবে চাষিদের। কম খরচে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে পারবে। রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন এলাকা বাসী
উল্লেখ্য, প্রকল্পের ফলে মহানন্দা নদীর প্রবাহ ও নিষ্কাশন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি কাজে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। এতে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকার কৃষি উৎপাদন বাড়বে। এতে দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকার মৎস্য উৎপাদনের মাধ্যমে এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। ৩৬ কিলোমিটার নদী খনন, প্রায় ৭ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ, রাবার ড্যাম নির্মাণ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম থাকবে এ প্রকল্পের অধীনে। প্রকল্পের পরিকল্পনায় এ প্রকল্পটিকে লাভজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।